মোবাইল আসক্তির কারন ও প্রতিকার


মোবাইল আসক্তি এক ধরনের মানসিক সমস্যা। মোবাইল আসক্তি বর্তমান সমাজকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছে। এই আসক্তির কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
মোবাইল-আসক্তির-কারন-ও-প্রতিকার


বিভিন্ন গবেষক এর মতে, মোবাইল আসক্তি বর্তমানে ও ভবিষ্যতে পৃথিবীর অনেক বড় ক্ষতিসাধন করবে বলে আমি মনে করি।আজকের আর্টিকেলটিতে আমি মোবাইল আসক্তির কারণ ও এর প্রতিকারসম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।

মোবাইল আসক্তির কারন

মোবাইল আসক্তির অনেকগুলো দিক আছে সেগুলো কি জানতে চান? হ্যাঁ, তাহলে আপনি ঠিক জায়গায় এসেছেন। মোবাইল আসক্তির কারণের মধ্যে রয়েছে পারিবারিক কারণ, সামাজিক কারণ, পরিবেশগত কারণ ইত্যাদি। এই কয়টি বিষয় নিয়ে মোবাইল আসক্তির কারণগুলি নিম্নে জানার চেষ্টা করব।
  • পারিবারিক কারণঃ মোবাইল আসক্তির ওপর পারিবারিক কিছু কারণ জড়িয়ে থাকে। যেমন অনেক পরিবার আছে যারা একে অন্যকে সময় দিতে পারেনা খুব ব্যস্ততা দেখায়, এরকম পরিবারে যারা একাকী বসবাস করে তারা সময় কাটানোর জন্য এই মোবাইল হাতে নেই, ফলে সে মোবাইলকে তার কাছের সঙ্গী হিসেবে মনে করে এবং সারাদিন সেটি নিয়েই পড়ে থাকে। জীবন জগৎ সম্পর্কে তার ধারণা এককেন্দ্রিক হয়ে যায়। বিশেষ করে পরিবারের শিশুদের ক্ষেত্রে এসব সমস্যা বেশি দেখা দেয় এবং এই কারণে মোবাইল আসক্তি তাদের শরীরে মনে বিশাল বড় কুফল হয়ে নামে।
  • পরিবেশগত কারণঃ বর্তমান সমাজে বাহিরে বের হলেই সবার হাতে একটি করে স্মার্টফোন দেখা যায়। কখনো কেউ বাজারে বসে যদি গল্প করে সেখানে কেউ গল্প না করে যার যার মত মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকি। বর্তমান সময়ে এটি একটি পরিবেশগত সমস্যা বলে আমি মনে করি। যখন কারো হাতে মোবাইল ছিল না সেই সময়টাই মানুষ কোয়ালিটি টাইম পার করত আর এখনকার সময়ে পরিবেশটা এমন হয়ে গেছে যে প্রত্যেকটি মানুষ মোবাইল ঘাঁটাঘাটি করা নিয়ে ব্যস্ত, কারো দু দণ্ড কথা বলার সময় নেই। এতে করে পরিবেশে বিশেষ ধরনের কুপ্রভাব পড়ার ফলে পরিবেশগত অনেক রকম ক্ষতি সাধিত হয়।
  • সামাজিক কারণঃ মোবাইল আসক্তির আরেকটি বড় কারণ হলো সামাজিক প্রভাব। বিশেষ করে শিশুদের উপর এই প্রভাব বেশি করে পড়ার কারণ হলো বর্তমান সময়ে বাবা মারা ঠিকমতো বাচ্চাদের সময় দিতে চায় না এই কারণে তারা মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে যায়। এছাড়াও অনেকে বন্ধু-বান্ধব বা কাছের সঙ্গীদের সাথে যোগাযোগ রাখার জন্য অতিরিক্ত ফোন ব্যবহার করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি সব সময় মানুষ দেখতে থাকে এবং এটাতে তাদের বিনোদন খোঁজার চেষ্টা করে, এতে করে সমাজের উপর ক্ষতি সাধন হয়।
  • মানসিক কারণঃ মোবাইল আসক্ত হওয়ার পেছনে আরেকটি কারণ হলো মানসিক কারণ। মানসিকভাবে অসুস্থ থাকলে মানুষ মোবাইলের উপর বেশি নির্ভরশীল হয়, তারা মোবাইলকে তাদের বিনোদন মনে করে এবং তারা মোবাইলের মাধ্যমে মানসিক উদ্যোগ এবং একাকীত্ব দূর করে।
  • শারীরিক কারণঃ মোবাইলের কিছু ক্ষতিকর দিক আছে যার জন্য শরীরে অনেক বড় ক্ষতি হয়। মোবাইল অতিরিক্ত দেখলে চোখের ক্ষতি হয়, কারণ মোবাইলের নীল রশ্মি মস্তিষ্কের মেলাটোনিন হরমোন নিঃসরণে বাধা দেয় । ফলে ওই ব্যক্তির ঠিকমত ঘুম হয় না এবং এ থেকে অনিদ্রা ও ঘুমের ব্যাঘাত দেখা দেয়। এটা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতি যা বলে বোঝানো যাবে না।

মোবাইল আসক্তির কুফল

বর্তমান সময়ে আমাদের জীবন যাপন অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে এই মোবাইল। মোবাইল থাকার কারণে মানুষেরা অনেক আপডেট হয়েছে এবং সবকিছুই অতি সহজেই করতে পারে। তবে এই আধুনিক প্রযুক্তি যতটা আমাদের জীবনে সুফল বয়ে এনেছে ততটাই এর খারাপ কিছু প্রভাব ফেলেছে। একটা জিনিস মনে রাখবেন যে কোন জিনিসেরই সুফল ও কুফল দুইটি আছে। অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি বেড়ে গেলে সমাজ জীবন এবং পারিবারিক জীবন থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে হয়। প্রত্যেকের মোবাইল আসক্তির কুফল সম্পর্কে জানাটা জরুরী।
আজকাল সোশ্যাল মিডিয়া প্রত্যেকটা মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যার কারণে প্রতিটি মানুষ মোবাইল বা বিভিন্ন ইলেকট্রিক ডিভাইসের উপর নির্ভরযোগ্য হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে যুব সমাজের উপর এটি বেশি প্রভাব ফেলছে। উঠতি বয়সের কিছু ছেলে মেয়েরা দিনে কমপক্ষে ১০ ঘণ্টায় ফোন ব্যবহার করে এটি সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে। তবে সবচেয়ে অবাক কর বিষয় হলো মানুষ এখন মোবাইলে কথা বলতে এবং মেসেজিং করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। মানুষের সাথে মানুষের সামনাসামনি কথা বলার সময় নাই বর্তমান সময়ে, যেটার ফলে আমাদের সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক দিক থেকে আমরা অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

জরিপে দেখা গেছে, কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে ৫৫% মানুষই কিছুক্ষণ ফোন ব্যবহার করার পর তাদের চোখে অসুবিধা বা অস্বস্তি অনুভব করে। এটার মূল কারণ হলো অতিরিক্ত মোবাইল দেখা। ভবিষ্যতে অতিরিক্ত মোবাইল দেখার কারণে আমাদের দৃষ্টি শক্তির চরম ক্ষতি হতে পারে যেটি আমাদের সারা জীবনের কষ্ট হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই যে কোন জিনিসের ব্যবহার সময় বেঁধে করা উচিত। এছাড়া মোবাইল ব্যবহারকারী ব্যক্তিগণ বিভিন্ন ধরনের নায়িক সমস্যায় ভোগেন। 

অতিরিক্ত যারা মোবাইল ব্যবহার করেন তাদের মধ্যে একটা জিনিস লক্ষ্য করা যায় সেটি হল তাদের কাছে ফোন না থাকলেও তারা ফোনের রিংটোন শুনতে পান কখনো কখনো তাদের কানে ভাইব্রেশন এর শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। যখন আপনি অতিরিক্ত মোবাইলে আসক্ত হয়ে যাবেন তখনই এমনটা ঘটে। কারণ আপনার মাইন্ড পুরোপুরিভাবে ডিভাইসের উপর সেটআপ হয়ে যায়। ফলে আপনি মোবাইল থেকে দূরে থাকলেও মোবাইলের আসক্তি আপনার ভিতর থেকেই যায়।

শিশুদের মোবাইল আসক্তির কারণ ও প্রতিকার

মোবাইল আসক্তির জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কে জানেন? তারা আর কেউ নয় আমাদের ঘরেরই সন্তানেরা, শিশুরা। ডিজিটাল যুগে মানুষ সময়ের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে অনেকটাই প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে গেছে। তার সাথে সাথে মানুষের ধৈর্য অনেকটা কমে গেছে। বর্তমান শিক্ষা জীবনেও প্রযুক্তি ঢুকে যাওয়ায় শিশু-কিশোরদের মধ্যে ডিভাইস আসক্তি ঢুকে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের আধুনিক করেছে ঠিকই কিন্তু এর ক্ষতিকারক প্রভাবটাও খেয়াল রাখা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আসুন নিম্নে শিশুদের মোবাইল আসক্তির কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করি-

শিশুদের মোবাইল আসক্তির কারন

  • ডিজিটাল যুগে ল্যাপটপ, মোবাইল, ট্যাব এগুলো কাজের সৃজনশীলতা পাড়ায় এবং অনেকটাই সুবিধা জনক এটি শিশুদের জন্য বিপদজনক।
  • অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার শিশুদের মানসিক বিকাশে ব্যাঘাত ঘটায় এবং বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে।
  • মোবাইল আসক্তির ফলে শিশু সময় মত খেতে চায় না হলে তারা নানান রোগে এবং পুষ্টিহীনতায় ভোগে।
  • শিশুদের দৃষ্টি শক্তির উপর বিশাল প্রভাব ফেলে।
  • শিশুদের পড়াশোনার মনোযোগ কমে যাবে এবং ডিভাইসের উপর মেনোজক বেড়ে যাবে।
  • শিশুরা কখনো কখনো পারিবারিক মূল্যবোধ বুঝবে না ফলে সে তার বাবা মার সাথে খারাপ ব্যবহার করবে।

প্রতিকার

  • শিশুদের ঘরের কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে। বাবা-মার চেষ্টা করতে হবে সব সময় বাচ্চাদের সান্নিধ্যে রাখার এতে করে তাদের বাবা-মা কি কি কাজ করে সেগুলো সৃজনশীল শিক্ষা তারা পাবে। বাচ্চারা ঘরের কাজ করবে এতে করে তাদের মোবাইল আসক্তি কমবে।
  • শিশুদের মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করতে দিন তবে সেটি অবশ্যই সময় বেঁধে। সারাদিনে যে কোন একটা টাইমে তাদের এই ডিভাইস ব্যবহার করতে দিন তাহলে দেখবেন আস্তে আস্তে মোবাইলের বা ল্যাপটপের প্রতি তাদের আগ্রহ কমে যাবে।
  • বাচ্চাদের সব সময় টেবিলে বসে সবার সাথে খাওয়ানোর অভ্যাস করাবেন। এখনকার সময় বেশিরভাগ বাচ্চারা ডিভাইস না দেখলে খাবার খেতে চায় না এই অভ্যাসটা একদম ত্যাগ করানোর চেষ্টা করবেন, বাচ্চাদের খাওয়ানোর সময় তাদের সাথে গল্প করুন নতুন বিষয় সম্পর্কে ধারণা দিন এভাবে তাদের খাবার খাওয়ান দেখবেন একসময় তারা এমনিতেই আপনাদের সাথে খাবার খাচ্ছে।
  • মাঝে মাঝে বাবা মারা বাচ্চাদের সারাদিনের মধ্যে কিছু সময় তাদের সাথে খেলাধুলা করুন, গল্পের বই-ছড়া পড়ে শোনান, এতে করে তাদের ব্রেন ডেভেলপ হবে।

শিক্ষার্থীদের মোবাইল আসক্তি

সারা পৃথিবী জুড়ে যখন করো না প্রকোপ বেড়ে গেল তখন সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সবাই ধ্বংসের দিকে অগ্রসর হয়েছিল এবং এর পাশাপাশি শিক্ষাব্যবস্থাও ধ্বংসের দিকে চলে গেছে। কারণ তখন করোনার নাম করে বাসা থেকে বের না হওয়ার ঘোষণা দেওয়াই অনলাইন ভিত্তিক ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়, আর তখনই ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় মোবাইল বা ল্যাপটপ। তারপর থেকে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোবাইলের আসক্তি। এটা এক ধরনের নেশায় পরিণত হয় ফলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার নামে আরো অন্যান্য আজেবাজে জিনিস দেখে সেগুলোর প্রতি আসক্ত হয়ে নানান কুকর্মে জড়িয়ে পড়ে।

তাই আমাদের প্রত্যেকের এই ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত। শিক্ষার্থীদের হাতে মোবাইল না দিয়ে তাদের সাথে কোয়ালিটি সময় পার করার চেষ্টা করুন। এর ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে ছেলেদের হাতে মোবাইল না তুলে দিয়ে আকর্ষণীয় বই, সৃজনশীল কাজে লিপ্ত করুন। একটা জিনিসের যখন সমস্যা রয়েছে তেমনি সেটির সমাধানও রয়েছে, তাই প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে করে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের মধ্যে আর না আসে।

মোবাইল আসক্তির কমানোর উপায়

মোবাইল আসক্তি কমানোর অনেকগুলো কার্যকরী উপায় সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করব। মোবাইলের নেশা বেড়ে গেলে তা কমানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ না জরুরি।
  • নিজের ফোনকে অফলাইন করে রাখুনঃ সারা দিনে কয়েক ঘণ্টা চেষ্টা করুন নিজের ফোন থেকে দূরে থাকার এর জন্য মোবাইল ফোন এর নেট বন্ধ করে রাখুন। বিনোদনের জন্য নিজেকে বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত রাখুন যেমন বই পড়া, বাড়ির বিভিন্ন কাজে সাহায্য করা, বন্ধু-বান্ধবের সাথে বাইরে হাটাহাটি করা ইত্যাদি অভ্যাস গড়ে তুললে ফোনের ব্যবহার অনেকটাই সীমিত হয়ে আসবে।
  • নো অ্যালাও ফোন তৈরি করুনঃ মাঝে মাঝে মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকার জন্য মোবাইল রেখেই বাইরে বেড়াতে যান। সব সময় মোবাইল সাথে না রেখে বাড়িতে মোবাইল রেখে বাইরে যাবেন দেখবেন মোবাইলের প্রতি আপনার আসক্তি অনেকটাই কমে আসবে।
  • মোবাইলে প্রোগ্রাম কম রাখুনঃ মোবাইল আসক্তি কমাতে সবচেয়ে জরুরী বিষয় হলো মোবাইলের মধ্যে অতিরিক্ত অ্যাপস না রেখে অল্প অ্যাপস রাখলে আপনার মোবাইল দেখার উপর ঝোঁক কমে যাবে। অপ্রয়োজনে অ্যাপসগুলো ডিলিট করে দিন।

মোবাইল আসক্তির জন্য স্বাস্থ্যের ক্ষতিকর প্রভাব কি কি?

মোবাইল আসক্তির জন্য মানবজাতির স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে, ফলে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে বেশিরভাগ সময় অসুস্থ থাকে। আপনি কি জানতে চান, স্মার্টফোন আসক্তির জন্য শরীরের কতটুকু ক্ষতি হতে পারে। চলুন, স্বাস্থ্যের ক্ষতিকর প্রভাব গুলো সম্পর্কে আলোচনা করি-
  • অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ফলে আমাদের মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি এবং হাটের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
  • গবেষণায় জানা যায়, মোবাইল ফোন মাথা, ব্রেন বা গলা টিউমারের কারন হতে পারে
  • মোবাইল ব্যবহারের কারণে চোখের জ্যোতি কমে যাওয়া সম্ভাবনা বেশি। মাত্রাতিরিক্ত মোবাইলের ব্যবহার চোখের রেটিনা নষ্ট করে আপনার অন্ধত্বের কারণ হতে পারে।
  • মোবাইল ব্যবহারকারীরা মোবাইলে অনেকক্ষণ কথা বলেন, দীর্ঘক্ষন গান শোনার ফলে কানের মধ্যে বিরাট প্রতি সাধন হয়, ফলে অনেকেই কানে কম শোনেন।
  • মোবাইল ব্যবহারের ফলে স্নায়বিক সমস্যা দেখা দেয়। মাথার ব্রেন যখন অতিরিক্ত ডিভাইসের উপর নির্ভরশীল হয় তখন মস্তিষ্কের স্নায়ুর উপর চাপ ফেলে হলে মাথা ব্যথা ও মাইগ্রেনের মতন সমস্যা দেখা দেয়।

মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির পরামর্শ

মোবাইল আসক্তি থেকে কিভাবে মুক্তি পেতে চান জানতে চান? তাহলে আমি আপনাদের কিছু আসক্তি কমানোর পরামর্শ দিতে পারি। প্রথমেই এই আসক্তি থেকে দূরে থাকতে চাইলে মানসিকভাবে আপনার মনস্থির করতে হবে। আপনি মনে মনে নিয়ত করবেন যে আজকে কয়েক ঘন্টা আমি মোবাইলের আশেপাশে থাকবো না এরকম ভাবে আপনার মনকে সাজান তারপর দেখুন ম্যাজিক। আস্তে আস্তে আপনার মোবাইলের প্রতি আগ্রহ কমে আসবে।
মোবাইলে অপ্রয়োজনীয় গেমস, পর্নোগ্রাফি এবং অন্যান্য অ্যাপস এর ব্যবহার থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন। মোবাইলে অপ্রয়োজনীয় apps ডিলিট করে দিন। বাচ্চা বা কিশোর কিশোরীদের সামনে মোবাইল ব্যবহার না করে তাদেরকে বেশি বেশি সময় দিন দেখবেন তারাও আপনাকে সময় দিচ্ছে আপনারও মানসিকভাবে অনেকটাই ভালো লাগছে। মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তি পেলে আপনি শারীরিক ও মানসিক দুটো ভাবেই সুস্থ থাকতে পারবেন।

মোবাইল আসক্তি যুব উন্নয়নের অবক্ষয়

বর্তমান ডিজিটাল যুগে নতুন এক আসক্তির নাম হল মোবাইল আসক্তি। যেটি আমাদের সমাজের তরুণ তরুণীদের অবক্ষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি একটি ভয়াবহ নেশা, মোবাইল আসক্তির জন্য যুব উন্নয়নের অবক্ষয় হচ্ছে দিনকে দিন। আমাদের সময়ই বলি, আমরা তরুণ তরুণী থাকতে বিকাল বেলা বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে খেলাধুলা করতাম, শরীর চর্চা করতাম, একে অন্যের সাথে গল্প করতাম। কিন্তু বর্তমান সময়ে এগুলোর আর কিছুই দেখা যায় না।
মোবাইল-আসক্তি-যুব-উন্নয়নের-অবক্ষয়


আপনারা আরেকটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখেছেন এখনকার ছোট ছেলে মেয়ে থেকে শুরু করে যুবক-যুবতী, কিশোর কিশোরীদের মধ্যে ছোট থেকেই চশমা পরার প্রবণতা বেড়েছে। এটি প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি। যা আমাদের যুব সমাজের উন্নয়নকে দিন দিন গ্রাস করে নিচ্ছে।

মোবাইল আসক্তি কমাতে করণীয়

মোবাইল আসক্তি কমাতে করনীয় হলো সচেতন মূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। আমরা যদি একটু সচেতন হই তাহলে মোবাইল ব্যবহারের আসক্তি থেকে নিজেকে বা অন্যদের বিরত রাখতে পারব। মোবাইল আসক্তি কমাতে কি কি করনীয় তা নিম্নে দেওয়া হলো-
  • নিজেকে নিয়ে চিন্তা করা
  • সৃজনশীল এবং কল্যাণমূলক কাজে ব্যস্ত থাকা
  • নিয়মিত শরীর ও স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা
  • পরিবারের সদস্যদের সাথে গল্প করা ও সময় কাটানো
  • নিয়মিত শরীর চর্চায় মনোযোগ দেওয়া
  • মোবাইলের বদলে বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করা
  • হেডফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকা
  • ঘুমানোর আগে মোবাইল ব্যবহার থেকে বিরত থাকা
  • মোবাইলে অপ্রয়োজনীয় apps কম রাখা
  • মোবাইলের নোটিফিকেশন মাঝে মাঝে বন্ধ রাখা

লেখক এর মন্তব্যঃ মোবাইল আসক্তি কমাতে কয়েকটি নিয়ম মেনে চলুন

আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমি মোবাইল আসক্তির কারন ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমার মতে, মোবাইল আসক্তি কমাতে চাইলে প্রত্যেকটা মানুষের সামাজিকভাবে দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন সুপরামর্শ নিয়ে মোবাইল ব্যবহার থেকে কিভাবে বিরত থাকা যায় এবং বিরত রাখা যায় মানুষকে সেটির পরিকল্পনা করা উচিত।আশা করি, আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেকটাই এই ব্যাপারে উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪